• ৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাটের সরকারী গুদামের সাড়ে ৩ কোটি টাকার চাল পাচারকারী ফেরদৌস গোপনে বিদেশে যেতে পাসপোর্ট করেছে!

Mofossal Barta
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪, ১৪:৪১ অপরাহ্ণ
লালমনিরহাটের সরকারী গুদামের সাড়ে ৩ কোটি টাকার চাল পাচারকারী ফেরদৌস গোপনে বিদেশে যেতে পাসপোর্ট করেছে!

লালমনিরহাটের সরকারী গুদামের সাড়ে ৩ কোটি টাকার চাল পাচারকারী ফেরদৌস গোপনে বিদেশে যেতে পাসপোর্ট করেছে!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আঃ রাজ্জাক সরকার গাইবান্ধা জেলা: লালমনির হাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী খাদ্য গুদামের পরিদর্শক ফেরদৌস আলম কর্তৃক প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা মূল্যের ২২৫ টন সরকারি চাল কালোবাজারে বিক্রি করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাত্র ৬’শ বস্তায় ৩০ মেট্রিক টন চাল জব্দ করা হয়। এখনো ১৯৫ মেট্রিক টন চালের হদিস পাওয়া না গেলেও উক্ত খাদ্য গুদামের পরিদর্শক ফেরদৌস আলম সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে গোপনে বিদেশে চলে যাওয়ার জন্য প্রাইভেট চাকরির পরিচয়ে গাইবান্ধা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করেছে।
প্রকাশ, লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী খাদ্য গুদামের খাদ্য পরিদর্শক (ওসি এলএসডি) ফেরদৌস আলম বিভিন্ন সময়ে সাড়ে তিন কোটি টাকা মূল্যের ১৯৫ মেট্রিক টন চাল ইতোপূর্বে কালোবাজারে বিক্রি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভোররাতে ৩০ মেট্রিক টন সরকারি চাল ২৫টি ট্রলিযোগে গুদাম থেকে সরিয়ে ফেলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম তাৎক্ষণিক খাদ্য গুদামে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের সুকান দিঘী এলাকার চালকল মালিক একরামুল হকের গুদাম থেকে ৩০ মেট্রিক টন ওজনের ৬০০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। কিন্তু গুদাম মালিক পলাতক থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনা তদন্তে পরদিন শুক্রবার সকালে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (ভারপ্রাপ্ত) সদস্য সচিব করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। এছাড়াও পরদিন শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার।
সুত্র জানায়, তদন্ত কমিটিও তদন্ত করেছে। তছরুপকৃত চালের কিছু অংশ উদ্ধার উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ফেরদৌস আলমকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা এনামুল হক। সম্প্রতি স্পশাল অডিট টিম এসে অডিট করেছে। কিন্তু এই খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ফেরদৌস আলমকে লাপাত্তা দেখানো হলেও তার নিজস্ব এলাকা গাইবান্ধায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুধু তাই নয়, সে গোপনে বিদেশে চলে যাওয়ার জন্য প্রাইভেট চাকরির পরিচয়ে গাইবান্ধা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করার জন্য গত ১৯ নভেম্বর আবেদন করেছে এবং পরদিন ২০ নভেম্বর পাসপোর্ট অফিসে ফিংগারিং করা হয়েছে। পাসপোর্টের ফাইল পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য গাইবান্ধা এসবি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে। তিনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলেই পাসপোর্ট হাতে নিতে পারবে এবং যেকোন সময়ে গোপনে বিদেশে চলে যাবে।

এদিকে, কালিগঞ্জ উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা এনামুল হক, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম ও লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে, তবে ফেরদৌস আলম মামলায় জামিনে রয়েছে বলে নির্ভরশীল সুত্র জানায়। গুদাম সিলগালা করা হয়েছে, অভিযান চালিয়ে ৬’শ বস্তায় ৩০ টন চাল উদ্ধার করা হয়েছে। আরো বাকী ১৯৫ মেট্রিক টন চাল উদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছে।

এ বিষয়টির অগ্রগতি সম্পর্কে লালমনিরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অনিক পাল অন্তুর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৭২৬-৯২৮০২৬ এ গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬.০৭ মিনিটে বেশ কয়েক দফা মোবাইল করা হলেও রহস্যজনক কারণে তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় বিষয়টির বর্তমান অগ্রগতি সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি।