বরিশাল: বৈরী আবহাওয়ায় কারণে বরিশালে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যা কখনো হালকা ধরনের আবার কখনও মুষলধারে।
আর টানা বৃষ্টিতে এরই মধ্যে বরিশাল শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সেইসাথে নিম্নাঞ্চলে বাসা বাড়িতেও পানি ঢুকে গেছে বলে জানা গেছে।
তবে নদ-নদীর পানি এখনও বিপদসীমা অতিক্রম না করায় বৃষ্টি কমার সাথে সাথে দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনের কথা জানিয়েছেন প্রকৌশল বিভাগ।
রোববার (২ আগস্ট) সকালে বরিশাল নগরের বাসিন্দা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মানিক জানিয়েছেন, তিনি নগরের বটতলা এলাকায় ভ্যানে পণ্য নিয়ে বিক্রি করেন। তবে মুষলধারে বৃষ্টির কারণে গতকাল থেকে বটতলা এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে, ফলে আমার জীবিকার ওপরও গতকাল থেকে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
একই কথা জানিয়েছেন রিকশাচালক আল আমিন। তিনি বলেন, মুষলধারে বৃষ্টির পানিতে নগরের বটতলা, বগুরা রোড, সদর রোডসহ বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। সম্ভবত ড্রেনগুলো দিয়ে পানি নামছে না। আর এই পানির মধ্যে রিকশা যেমন চালনা কষ্টকর, তেমনি যাত্রীও কম।
আর বৃষ্টি চলতে থাকলে জলাবদ্ধ পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে জানিয়ে প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, সময়মতো নগরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল রাখতে হয়, এজন্য নিয়মিত ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা প্রয়োজন। সেইসাথে পরিকল্পিত উন্নয়নের পাশাপাশি শহরের ভেতরকার খাল নিয়মিত খনন করাও প্রয়োজন। কিন্তু বরিশালে যেমন মানুষ খালের জমি দখল করেছে, তেমনি খাল ভরাট করে রাস্তা-ড্রেনও বানানো হয়েছে। এর ফলে এখন জলাবদ্ধতা এখন নিয়মিত একটি বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে বরিশালবাসীর জন্য।
তবে বৃষ্টি হলে ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি পাবে এমন শঙ্কায় রয়েছেন নগরবাসী। আর আবহাওয়া অফিস বলছে আরও দুই একদিন এভাবে বৃষ্টি সম্ভাবনার কথা।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আবদুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ৯ টা থেকে রোববার সকাল ৯ টা পর্যন্ত বরিশালে ১৭৮ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। নিম্নচাপের কারণে আরও দুই/একদিন বৃষ্টিপাত হবে। আর কখনও ভারী আবার কখনো হালকা আকারে বৃষ্টিপাত হতে পারে।
তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে গত কয়েকদিনের থেকে দিনের তাপমাত্রা শনিবারের মতো রোববারও কিছুটা কম হয়েছে। রোববার সকাল ১০ টা পর্যন্ত বরিশালে সর্বোচ্চ ২৭ ডিগ্রি এবং সর্বোনিম্ন ২৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সেইসাথে বৃষ্টি শেষে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করলেও কোন নদ-নদীর পানি এখনও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। তবে নদ-নদীতে স্বাভাবিক সময়ের থেকে পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আর বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রুবেল হাওলাদার জানান, গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার কারণে বায়ু চাপের তারতম্য হয়েছে। এ কারণে বরিশাল বিভাগের বিভিন্নস্থানে ভারী ও অতিভারী বৃষ্টি হচ্ছে। যা আরো ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে।