• ২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এসএমই খাত শুধু ব্যবসা নয়, অর্থনীতির মেরুদণ্ড

Mofossal Barta
প্রকাশিত এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ১৮:১২ অপরাহ্ণ
এসএমই খাত শুধু ব্যবসা নয়, অর্থনীতির মেরুদণ্ড

এসএমই খাত শুধু ব্যবসা নয়, দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। এসএমই উদ্যোক্তারা তাদের লাভের শতকরা ৩০ ভাগই পুনরায় বিনিয়োগ করেন। যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

বিশেষ সংবাদদাতা:  সত্যিকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এসএমই খাতের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

এসএমই খাত শুধু ব্যবসা নয়, দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। এসএমই উদ্যোক্তারা তাদের লাভের শতকরা ৩০ ভাগই পুনরায় বিনিয়োগ করেন। যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এসএমই খাতের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার একটি হোটেলে এসএমই নীতিমালা ২০২৫-এর খসড়া নিয়ে জাতিসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং আইএলও বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত পরামর্শ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো: মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত পরামর্শ সভায় বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: নূরুজ্জামান এনডিসি ও রশিদুল হাসান, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম হাসান সাত্তার এবং আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পওটিআনিন।

এসএমই ফাউন্ডেশন বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র ২০১৩ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, দেশে ৭৮ লাখের বেশি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যা মোট শিল্প প্রতিষ্ঠানের ৯৯ শতাংশের বেশি। শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫ শতাংশই এসএমই খাতে। এই খাতে প্রায় আড়াই কোটিরও বেশি জনবল কর্মরত আছে। অধিক জনসংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, এমএসএমই একটি শ্রমনিবীড় ও স্বল্প পুঁজিনির্ভর খাত। উৎপাদন সময়কাল স্বল্প হওয়ায় জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এমএসএমই অবদান অনেক। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও সিএমএসএমই খাতের বিকাশ ও উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বস্তুত বাংলাদেশকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন অনুঘটকের ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এবং এসডিজি ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, যাদের ৬০ শতাংশই নারী-উদ্যোক্তা।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো: মুসফিকুর রহমান বলেন, ‘এসএমই ফাউন্ডেশন দেশের ৬৪ জেলায় প্রায় দেড় লাখ সিএমএসএমই উদ্যোক্তাকে সরাসরি সেবা দেয়ার পাশাপাশি ১১ হাজারের বেশি উদ্যোক্তাকে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণ করেছে। আমাদের বিশ্বাস, এসএমই নীতিমালা ২০২৫ বাস্তবায়িত হলে দেশের লাখো সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তা উপকৃত হবেন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।’

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘খসড়া এসএমই নীতিমালা ২০২৫-এর ঢাকা ও বিভাগীয় শহরে এসএমই ফাউন্ডেশন ও আইএলও বাংলাদেশের উদ্যোগে অংশীজনদের সাথে পরামর্শ সভা থেকে পাওয়া সুপারিশগুলো শিগগিরই শিল্প মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেয়া হবে।’

আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, ‘বর্তমানে আইএলও বাংলাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে ত্রিশ লাখ ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জাতিসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় এসএমই খাতের পূর্ণ সম্ভাবনা ও সক্ষমতাকে কাজে লাগানো প্রয়োজন।’