• ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘আগে চাঁদা দিতে হতো একজনরে, এখন দিতে হইতেছে চার-পাঁচজনরে’

Mofossal Barta
প্রকাশিত মার্চ ২৪, ২০২৫, ১৪:২২ অপরাহ্ণ
‘আগে চাঁদা দিতে হতো একজনরে, এখন দিতে হইতেছে চার-পাঁচজনরে’

"আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পুলিশকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে," বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. খান।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

অনলাইন ডেস্ক:  আলাপের শুরুতে “কেমন আছেন?” জানতে চাইলে মি. ইসলাম বলেন, “ভালো নেই।” “কেন?”

“আগে চাঁদা দিতে হতো একজনরে, এখন দিতে হইতেছে চার-পাঁচজনরে। তাহলে কীভাবে ভালো থাকি বলেন?,” জবাবে পাল্টা প্রশ্ন রাখেন মি. ইসলাম। গত পাঁচই অগাস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে একের পর এক চাঁদাবাজির কারণে রীতিমত আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানান ঢাকার এই ব্যবসায়ী।

“এখন তো আননোন (অপরিচিত) নাম্বার থেকে ফোন আসলেই ভয় লাগে। আবার কে জানি টাকা চায়!,” বলছিলেন মি. ইসলাম। রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত না থাকার পরও মামলার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

“বিভিন্ন গ্রুপকে আমি এরই মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ টাকা দিয়েছি। তারপরও আরও টাকা চাচ্ছে। না দিলে মামলায় নাম ঢুকায় দিবে বলে হুমকি দিয়েই যাচ্ছে,” বলেন মি. ইসলাম। এই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন যে, যারা চাঁদা নিয়েছেন এবং এখনও দাবি করছেন, তারা প্রায় সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তবে ব্যবসা ও নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের কারো নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি। মি. ইসলাম ছাড়াও ঢাকার অনেক ব্যবসায়ী এখন চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন।

অধিকাংশক্ষেত্রেই বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী পরিচয়ে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দলটি ইতোমধ্যে প্রায় দেড় হাজারের মতো নেতাকর্মীকে বহিষ্কারও করেছে। কিন্তু তারপরও তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রীতিমত বেগ পেতে হচ্ছে দলটিকে।

এ অবস্থার জন্য সিনিয়র নেতাদের কেউ কেউ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকেই দুষছেন। “আসলে বাংলাদেশের কালচারটাই নষ্ট করে দিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ,” বিবিসি বাংলাকে বলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

বিএনপি’র বাইরে গত কয়েক মাসে কোনো কোনো জেলায় জামায়াতে ইসলামী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠতে দেখা গেছে। এর মধ্যে ফেনীতে জেলা জামায়াতের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, সরকার চাঁদাবাজি বন্ধে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খান। “আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পুলিশকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. খান।