• ২৭শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আদম ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন যুবকেরা

Mofossal Barta
প্রকাশিত এপ্রিল ১১, ২০২৫, ১৬:৫১ অপরাহ্ণ
আদম ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন যুবকেরা

আদম ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন যুবকেরা

সংবাদটি শেয়ার করুন....

সৈয়দ সেলিম রেজা:- রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের হাজীরটারি গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের (২৫) সংসার ধান, পাট, তামাকের ব্যবসা করে ভালোই চলছিল।

চার মাস আগে রবিউলকে একই ইউনিয়নের বিড়াবাড়ি গ্রামের সাবেদুল ইসলাম (৪৫) ওমানে একটি চাকরির প্রস্তাব দেন। বেতন ৩৪ হাজার টাকা। রবিউল নিজের ৩৫ শতক জমি বিক্রি করে ও ধার-দেনা করে সাড়ে তিন লাখ টাকা তুলে দেন সাবেদুলের হাতে। গত বছর মে মাসে রবিউলকে ওমানে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে তাউজ নামের একটি কোম্পানিতে মাসিক মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতনে শ্রমিকের কাজ পান তিনি। মাস খানেক পর কোম্পানির মালিক রবিউলকে দেশে পাঠিয়ে দেন। এখন রবিউল একেবারে নিঃস্ব।

রবিউলের স্ত্রী রুনা বেগম বলেন, ‘ঘরোত একটা দানাও নাই। মোর সাথত ঝগড়া করি পাঁচ দিন আগোত ওমরা (রবিউল) ঢাকায় রিকশা চালেবার গেইছে। সাবেদুল ভাইজান পালে বেড়ায় টাকাও চাবার পাইছু না। মোবাইলফোনোত টাকা ফেরতের কথা কইলে ভয় দেখায়।’
মুঠোফোনে আদম ব্যবসায়ী সাবেদুলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি জরুরি কাজে ঢাকায় আছি। শুনেছি পরিশ্রমের কাজ করতে না পারায় রবিউল নিজেই দেশে চলে এসেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার জনশক্তি রপ্তানির লাইসেন্স না থাকলেও ঢাকা অফিসের মালিকের আছে।’ তবে ঢাকা কার্যালয়ের ঠিকানা ও বসের মুঠোফোন নম্বর চাইলে পরে দেবেন বলে সাবেদুল নিজের মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন।
একই অবস্থা ওই ইউনিয়নের দোহাজারী গ্রামের ওহেদ মাছুয়ার ছেলে ওবায়দুল হকের (২৬)। ওবায়দুল সিলেটে এসিআই কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। বছর খানেক আগে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার পলাশবাড়ী গ্রামের নান্নু মিয়ার। একপর্যায়ে নান্নু তাঁর বন্ধু পলাশবাড়ী গ্রামের শহিদুল ইসলামের মাধ্যমে ওবায়দুলকে কাতারে ৩৫ হাজার টাকা বেতনে অফিশিয়াল একটি চাকরির প্রস্তাব দেন।
ওবায়দুল তাঁর দুই বিঘা জমির মধ্যে এক বিঘা বিক্রি ও এক বিঘা বন্ধক রেখে তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা শহিদুলের হাতে তুলে দেন। গত বছর ১৮ এপ্রিল তিনি কাতার যান। সেখানে একটি কোম্পানিতে ১১ হাজার টাকা বেতনে শ্রমিকের কাজ পান। ১৮ দিন কাজের পর কোম্পানির মালিক ওবায়দুলকে দেশে পাঠিয়ে দেন।
ওবায়দুলের বাবা ওহেদ মাছুয়া বলেন, ‘নান্নু মিয়া কুবুদ্ধি দিয়া মোর সোনার সংসার নষ্ট করি দিছে।
জমিজমা ব্যাচে (বিক্রি) ছাওটাক টাকা দিয়া এখন মাইনসের বাড়ি হামাক মজুর করিবার নাগেছে।’ মুঠোফোনে ওবায়দুল অভিযোগ করেন, টাকা ফেরত চাইলে শহিদুল ও নান্নু হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।