• ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীনের ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে জাপানের নতুন ‘রেলগান’

Mofossal Barta
প্রকাশিত এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ১৪:৫৩ অপরাহ্ণ
চীনের ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে জাপানের নতুন ‘রেলগান’

ইউক্রেনও এখন নিজেদের লেজার অস্ত্র তৈরি করছে। তারা এই নকশা যুক্তরাজ্য থেকে পেয়েছে ২০২৪ সালে।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

অনলাইন ডেস্ক:   জাপানের নৌবাহিনী তাদের নতুন অস্ত্র ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেলগান’ উন্মোচন করেছে। জাহাজে বসানো ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেলগানটি চীন থেকে ছোড়া হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম। গত সপ্তাহে অত্যাধুনিক অস্ত্রটির কিছু ছবি প্রকাশ পেয়েছে। চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া থেকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে হুমকি বেড়ে যাওয়ায় টোকিও পরবর্তী প্রজন্মের অস্ত্র ব্যবহারের ওপর মনোযোগ দিচ্ছে।

 

রেলগানটি কোনো বিস্ফোরক বা প্রপেলান্ট ব্যবহার করে না, বরং ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বা বিদ্যুতের সাহায্যে খুব জোরে গোলা ছোড়ে। এতে ব্যয় কম এবং দ্রুতগামী ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতেও পারে। রেলগান সাধারণ অস্ত্রের চেয়ে অনেক বেশি গতিতে গুলি ছোড়ে। রেলগান থেকে ছোঁড়া গুলি প্রতি সেকেন্ডে ২ হাজার ৫০০ মিটার গতিতে চলে — যেটা সাধারণ ট্যাংকের গুলির চেয়ে অনেক বেশি।

ফলে এটি খুব দ্রুত গতির ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে পারবে। 

জাপানের মেরিটাইম সেলফ ডিফেন্স ফোর্স (জেএমএসডিএফ) জানিয়েছে, সেলফ ডিফেন্স ফ্লিটের কমান্ডার ভাইস অ্যাডমিরাল ওমাচি কাতসুশি ‘জেএস আসুকা’ জাহাজ পরিদর্শন করেছেন। যেখানে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও লজিস্টিক্স এজেন্সি রেলগানটি উন্নয়ন করছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এই অস্ত্র নৌবাহিনীর প্রতিরক্ষা আরো মজবুত করবে।

এ ছাড়া আকাশ, সমুদ্র ও স্থল লক্ষ্যবস্তুতে সাধারণ গোলার চেয়ে বেশি নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে পারবে। ২০১৬ সালে রেলগান নিয়ে গবেষণা শুরু হয় এবং ২০২৩ সালের অক্টোবরে এটি প্রথম জাহাজ থেকে গুলি ছোড়ে। 

গত সপ্তাহে জেএমএসডিএফ বলেছে, ‘রেলগান’ জাপানের ভবিষ্যৎ যুদ্ধ প্রস্তুতি ও জাতীয় প্রতিরক্ষা সক্ষমতা গঠনে সহায়তা করবে।

জাপান বলেছে, ২০২২ সালে তাদের কাছে দেশের সুরক্ষার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা ছিল মাত্র ৬০ শতাংশ। তাই তারা নতুন অস্ত্র বানাচ্ছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজস্ব রেলগান প্রকল্প ২০২১ সালে বাতিল করে দেয়। এক দশকের উন্নয়নকালে ৫০০ মিলিয়ন ডলার খরচের পরও বিদ্যুৎ এবং অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়ার সমস্যায় তারা এটি বন্ধ করে দেয়। 

এদিকে চীন অনেকদিন ধরেই নিজেদের রেলগান বানাচ্ছে, কিন্তু সেটা খুব গোপনে করছে। ২০১৮ সালে কিছু ছবিতে চীনের এক জাহাজে রেলগান দেখা গেছে। ছবিতে দেখা যায়, চীনা যুদ্ধজাহাজ হাইয়াং শান-এ একটি পরীক্ষামূলক রেলগান বসানো হয়েছে। ভারত, রাশিয়া এবং তুরস্কও তাদের নিজস্ব রেলগান পরীক্ষা করেছে।

যুক্তরাজ্য গবেষণা করলেও নিজস্ব রেলগান তৈরি করছে না। বরং তারা ড্রাগনফায়ার নামে একটি লেজার ভিত্তিক ‘ডিরেক্ট এনার্জি ওয়েপন’ নিয়ে কাজ করছে এবং সেটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ‘বিপ্লবী অস্ত্র’ হিসেবে বিবেচিত ড্রাগনফায়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে লেজার রশ্মি ব্যবহার করে। কোনো গোলা ব্যবহার করে না এবং একবার চালাতে খরচ পড়ে মাত্র ১০ পাউন্ড।

ইউক্রেনও এখন নিজেদের লেজার অস্ত্র তৈরি করছে। তারা এই নকশা যুক্তরাজ্য থেকে পেয়েছে ২০২৪ সালে।