• ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাড়ে চার লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় এক জন চিকিৎসক

Mofossal Barta
প্রকাশিত মে ৪, ২০২৫, ১২:৩৮ অপরাহ্ণ
সাড়ে চার লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় এক জন চিকিৎসক

পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. খালিদুর রহমান মিয়া বলেন, চিকিৎসকসংকটে উপজেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যে কোনো মুহূর্তে বিপর্যস্ত হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

পটুয়াখালী সংবাদদাতা: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষের সেবা চলছে মাত্র এক জন চিকিৎসক দিয়ে। চিকিৎসকসংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে উপজেলার সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৮৫ সালে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ৩১ শয্যায় উন্নীত হয়। ২০১৩ সালের শুরুর দিকে এটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তখন থেকেই চিকিৎসকসংকট চলছে। ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ চিকিৎসকের ১১টি পদ রয়েছে। এখন ১০টি পদই শূন্য।

দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসকসংকট চললেও তীব্র মাত্রা পেয়েছে মাস দেড়েক আগে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে বদলি হয়ে যান স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা ও ডা. এ এস এম সায়েম। এরপর একযোগে বদলি হয়ে যান ডা. মো. মিরাজুল ইসলাম, ডা. তাসমিম তানজিলা ইসলাম, ডা. মারজান আফরিন, ডা. লামিয়া আহম্মেদ। এরপর পদোন্নতি পেয়ে ডা. আব্দুর রউফ হন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। এখন তিনি বর্তমানে হাসপাতালটিতে একমাত্র চিকিৎসক। কোনো উপায় না পেয়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে মেডিক্যাল অফিসার এনে সামাল দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের আউটডোরে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। মেডিক্যাল অফিসার শাম্মি আক্তার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন রোগী দেখেছেন। তখনো তার সামনে অপেক্ষমাণ ছিলেন অন্তত ৩০ জন রোগী। তিনি বলেন, তার নিজের শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে মানবিক কারণে সকাল থেকেই চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

আউটডোরে অপেক্ষায় থাকা ফাতিমা বেগম ঝর্ণা ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আমার দেড় মাসের শিশুটিকে নিয়ে অপেক্ষা করছি। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। তিন দিন ধরে বাচ্চাটা পেটের পীড়ায় ভুগছে, স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে। এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়ছি।’

চন্দ্রদ্বীপ থেকে এসেছেন হাসিনুর বেগম। তিনি জানান, পাঁচ দিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছেন। হাসপাতালে এসে তিনি অপেক্ষা করতে করতে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, ‘চিকিৎসকসংকটের কারণে হাসপাতালের অবস্থা ভয়াবহ। আমি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মেডিক্যাল অফিসার এনে কোনো রকমে সামাল দিচ্ছি। চিকিৎসকসংকটের বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি।’

পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. খালিদুর রহমান মিয়া বলেন, চিকিৎসকসংকটে উপজেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যে কোনো মুহূর্তে বিপর্যস্ত হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন।