অনলাইন ডেস্কঃ
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় গতকাল সকালে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশ হেফাজতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ প্রথমে আফরোজা বেগমকে (৪০) মাদকের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে টাকার জন্য নির্যাতন করে হত্যা করে।
তবে পুলিশ দাবি করেছে তারা ৩০ পিস ইয়াবাসহ ওই নারীকে আটক করেছে এবং তার ওপর নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছে।
নিহতের ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির মোল্লা জানান, শনিবার মধ্যরাতে অভয়নগর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক সিলন আলীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাদের বাড়িতে আসে।
এ সময় তিনি জানান, তার মা পাশের একটি নলকূপ থেকে পানি আনতে বাসা থেকে বের হন।
“তোমার যা আছে তা নিয়ে নাও,” সাব্বির উদ্ধৃত করেছেন যে সিলন তার মাকে বলেছিলেন যিনি উত্তর দিয়েছিলেন যে তার কিছুই নেই।
সাব্বির আমাদের স্থানীয় সংবাদদাতাকে বলেন, “একজন মহিলা পুলিশ কনস্টেবল তখন আমার মাকে তল্লাশি করে কিছুই পায়নি। তখন এএসআই সিলন আমার সামনে তাকে মারধর করে এবং সে মাটিতে পড়ে যায়। তারপর সে আমার মায়ের চুল ফ্যানের সাথে বেঁধে তাকে নির্যাতন করে,” সাব্বির আমাদের স্থানীয় সংবাদদাতাকে বলেন। .
সাব্বিরের বড় ভাই মুন্না মোল্লা জানান, স্থানীয় কয়েকজনের প্ররোচনায় পুলিশের একটি দল তাদের বাড়িতে এসে তার মাকে ইয়াবা রাখার মিথ্যা অভিযোগে আটক করে।
“সিলন এবং অন্য কয়েকজন পুলিশ আমার মাকে নির্যাতন করে এবং তারপর রবিবার সকাল 1টার দিকে তাকে নিয়ে যায়,” তিনি বলেছিলেন।
“পুলিশ তার মুক্তির জন্য ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে। আমরা টাকা দিতে না পারায় তাকে নির্যাতন করে হত্যা করে,” মুন্না অভিযোগ করেন।
তিনি আরও জানান, গতকাল সকালে তারা থানায় গিয়ে তার মাকে খারাপ অবস্থায় দেখতে পান।
তারা অনুরোধ করলে পুলিশ তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে, তারা চেক-আপের পরে কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে কোনও পরীক্ষা না করেই তাকে নিয়ে থানায় ফিরে আসে, তিনি অভিযোগ করেন।
পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হাসিব আলী হাসান জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই ওই নারীর মৃত্যু হয়।
লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
গতকাল সকালে ওই নারীর বিরুদ্ধে মাদক মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
এএসআই সিলন অবশ্য বলেন, আফরোজার পরিবারের করা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকিকুল ইসলাম জানান, পুলিশ তাকে ৩০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে রাতে মহিলা লকআপে রাখে।
রবিবার সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান, তিনি বলেন, পুলিশ তাকে নির্যাতন করেনি।