মরিয়ম সুলতানা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী সম্প্রতি ‘ওড়না পরা’ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক কর্মচারীর দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছেন। ঘটনাটি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকেই নারীদের হেনস্তা, লঞ্চিত হওয়ার নানারকম অভিযোগ উঠছে। কিন্তু কার্যকর ভূমিকা নেই অন্তর্বর্তী সরকারের। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
হেনস্তার শিকার সেই নারী শিক্ষার্থী ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “এই ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে দেশে এখন অপরাধ করে, ইভটিজিং করে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ানো যাবে।”
তার ওই কথার মাঝে ‘রাগ, কষ্ট, ভয় ও হতাশা’ খুঁজে পেয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার তার ওই বক্তব্যের সাথে মন্তব্যের ঘরে গিয়ে সংহতি জানিয়েছেন এবং সরকারকে দুষেছেন।
ঢাবি’র ওই নারীর মতোই তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন, কিন্তু তাদের সেসব গল্প জানাজানি না হওয়ায় কোনো আলোচনায় আসেনি– এমন কয়েকজনের সাথে কথা বলেছে বিবিসি বাংলা।
তারা বলছেন, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অবস্থার মাঝে তারা নিরাপদ বোধ করছেন না।
কারণ ছাত্র – জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে সরকার পতনের প্রায় সাত মাস হতে চললো এবং এই কয়েক মাসে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো গণমাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানির কোনো না কোনো খবর সামনে এসেছে।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে ‘তৌহিদি জনতার’ নামে একদল মানুষ ‘মব’ বা দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ক্রমাগতভাবে এসব ঘটনার নেতৃত্ব দিচ্ছে।
অথচ, এগুলোর বিরুদ্ধে সরকারকে এখন পর্যন্ত শক্তভাবে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে দেখা যায়নি এবং দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার এখানে নীরব ভূমিকা পালন করছে এবং সরকারের এই চুপ থাকার কারণেই একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের মানুষ ক্রমাগত এসব হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড করার সাহস পাচ্ছে।
যদিও সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তারা কখনোই এসব ঘটনায় নীরবতা পালন করেনি।
তবে নারীদের হয়রানি বা নিপীড়নের ব্যাপারে শুধু যে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তা নয়; দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অবস্থান নিয়েও মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
যদিও রাজনৈতিক দলগুলোও দাবি করছে, তারাও কখনও নীরব থাকেনি।