• ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদে ঘাঁটি নির্মাণের জন্য ‘চন্দ্র ইট’ তৈরি করল চীন

Mofossal Barta
প্রকাশিত অক্টোবর ২২, ২০২৪, ১৩:৪৩ অপরাহ্ণ
চাঁদে ঘাঁটি নির্মাণের জন্য ‘চন্দ্র ইট’ তৈরি করল চীন

This composite image of the moon using Clementine data from 1994 is the view we are most likely to see when the moon is full. Credit: NASA To learn about NASA's LRO project go to: http://www.nasa.gov/mission_pages/LRO/main/index.html NASA Goddard Space Flight Center contributes to NASA’s mission through four scientific endeavors: Earth Science, Heliophysics, Solar System Exploration, and Astrophysics. Goddard plays a leading role in NASA’s endeavors by providing compelling scientific knowledge to advance the Agency’s mission. Follow us on Twitter Join us on Facebook

সংবাদটি শেয়ার করুন....

প্রথমবারে মতো চাঁদে যাওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয় ১৯৫৭ সালে রাশিয়ার মহাকাশযান স্পুটনিক উৎক্ষেপণের মাধ্যমে। এরপর ১৯৬৯ সালে অ্যাপলো-১১ অভিযানের মাধ্যমে চাঁদে মানুষ পাঠায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই প্রতিযোগিতা নতুন করে শুরু হয়েছে এই দশকে।

গত প্রায় দেড় বছর ধরে নতুন করে চাঁদে যাওয়া নিয়ে নিজেদের অভিযানের কথা বলেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

সেই ধারাবাহিকতায় এবার ভবিষ্যতে চাঁদে ঘাঁটি নির্মাণের জন্য সম্প্রতি ‘লুনার ব্রিকস বা চন্দ্র ইট’ তৈরি করলেন চীনা গবেষকরা। এটি এমন এক বিশেষ উপাদান থেকে তৈরি, যার গঠন চাঁদের মাটির মতোই বলে দাবি তাদের।

‘হুয়াজং ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বা এইচইউএসটি’-এর সাম্প্রতিক এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ‘চন্দ্র ইট’ তৈরিতে চাঁদের মাটির সিমুলেশন ব্যবহার করেছেন চীনা গবেষক ও বিজ্ঞানী ডিং লিয়ুনের নেতৃত্বে গবেষকদের একটি দল, যা প্রচলিত লাল ইট বা কংক্রিটের ইটের চেয়েও তিনগুণ মজবুত বলে প্রতিবেদনে লিখেছে চীনের সংবাদ চ্যানেল সিজিটিএন।

‘অ্যাডিটিভ ম্যানুফ্যাকচারিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরেকটি নির্মাণ বিকল্পও তৈরি করেছে গবেষণা দলটি, যেখানে চাঁদের মাটি ব্যবহার করে ঘর প্রিন্ট করার জন্য একটি থ্রিডি প্রিন্টিং রোবট বানিয়েছেন তারা।

এইচইউএসটি-এর অধ্যাপক ঝো চেং বলেছেন, এই ‘চন্দ্র ইট’ বা চাঁদের মাটির গঠন তৈরিতে পাঁচটি আলাদা ধরনের ‘সিমুলেটেড’ ও তিনটি ভিন্ন ‘সিন্টারিং’ প্রক্রিয়া ব্যবহার করেছে গবেষণা দলটি, যা ভবিষ্যতে চাঁদে ঘাঁটি নির্মাণের জন্য উপযুক্ত উপাদান নির্বাচন করতে আরও বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য দেবে।

সিন্টারিং হচ্ছে, পাউডারজাতীয় কোনো পদার্থকে এমনভাবে চাপ বা তাপ প্রয়োগ করা যাতে এটি গলে না গিয়ে আরও শক্ত কঠিন রূপ ধারণ করে।

ঝো বলেছেন, বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে চাঁদের মাটির গঠন। চাঁদের যে স্থানে চ্যাং’ই-৫ মহাকাশযান অবতরণ করেছে “ঠিক সেই স্থানের মাটিকে অনুকরণ করেই বানানো হয়েছে আমাদের এই চন্দ্র ইট”, যা মূলত আগ্নেয়গিরিজাত শিলা বা ব্যাসল্ট।

এক্ষেত্রে কিছু মাটির গঠন তৈরি হয়েছে চাঁদের অন্যান্য স্থানে পাওয়া মাটির অনুকরণ করেও, যা আদতে অ্যানথোসাইট। ক্রমাগত তাপ ও চাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে সাধারণত বিটুমিনাস বা লিগনাইট কয়লার পরিবর্তিত রূপ থেকে অ্যানথোসাইট তৈরি হয়।

তবে চাঁদের পরিবেশে টিকে থাকতে পারবে কি না তা দেখার জন্য নানা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে গবেষকদের তৈরি এসব ইটকে।

মহাজাগতিক বিকিরণ’সহ চাঁদে রয়েছে এক অদ্ভুত রকমের বায়ুশুন্য পরিবেশ। চাঁদে দিনের তাপমাত্রা ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায় ও রাতে মাইনাস ১৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। তাই তাদের বানানো এসব ইট ভালভাবে তাপ নিরোধক ও চাঁদের বিকিরণ সহ্য করতে পারে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে গবেষণা দলটিকে, বলেন ঝো।

‘তিয়ানঝু-৮’ নামের কার্গো মহাকাশযানে করে গবেষকদের বানানো চাঁদের এসব ইট পাঠানো হবে চীনের মহাকাশ স্টেশনে, যাতে এগুলোর যান্ত্রিক ও তাপ সহ্যক্ষমতা এবং চাঁদের মহাজাগতিক বিকিরণ সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে কি না তা দেখতে হবে।

গবেষকদের অনুমান, প্রথমবারের মতো পৃথিবীতে তৈরি এসব ইটকে চাঁদের মাটিতে পাঠানো সম্ভব হবে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ।

মঙ্গলবার মহাকাশ বিজ্ঞানের জন্য জাতীয় পযায় থেকে এক দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকাশ করেছে চীন, যেখানে ২০৫০ সালের মধ্যে মহাকাশ বিজ্ঞানে উন্নয়নের একটি রূপরেখাও দিয়েছে দেশটি।

এদিকে, চীনের উদ্যোগে শুরু করা আন্তর্জাতিক চাঁদ গবেষণা কেন্দ্রটির দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রোগ্রামিং কাজ শুরু হবে ২০২৮ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে।