মফঃস্বল বার্তা প্রতিবেদন: মিয়ানমারে সরকারবিরোধী প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো সাগাইং অঞ্চলের দক্ষিণাঞ্চলীয় কালে টাউনশিপে সেনাবাহিনীর ‘কান পার নি’ ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানিয়েছে, সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের প্রবেশপথে অবস্থিত ঘাঁটিটি দখলে নেতৃত্ব দিয়েছে হামলার সমন্বয়কারী চিন ডিফেন্স ফোর্স (কালাই-কাবাও-গাঙ্গাও)।
মণিপুর নদীর দক্ষিণ তীরে কালে-গাঙ্গাও সড়কের পাশে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটিটি সরকারি বাহিনী এবং জান্তাপন্থী পিউ সো হতি মিলিশিয়া গ্রুপ পরিচালিত করতো। সাগাইং অঞ্চলের দক্ষিণ কালে টাউনশিপকে মাগওয়ে অঞ্চলের উত্তর গাঙ্গাও টাউনশিপের সঙ্গে সংযুক্ত করার কৌশলগত প্রবেশদ্বার ছিল এটি।
সংবাদমাধ্যমের খবর, সেখানে জান্তা নিয়ন্ত্রিত মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার জন্য কুখ্যাত। যার মধ্যে রয়েছে গোলাবর্ষণ ও গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া। সেখানকার বাসিন্দারা সামরিক শাসনের বিরোধিতা করে।
গত বছরের শুরুর দিকে মিলিশিয়া সদস্যরা গাংগাও টাউনশিপের সামরিক সমর্থক মায়াউক খিন ইয়ান গ্রামে আটক দুই সরকারবিরোধী প্রতিরোধ সদস্যকে জনসমক্ষে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে।
চিন ডিফেন্স ফোর্সের এক মুখপাত্র শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ইরাবতীকে বলেন, তাদের যোদ্ধারা কান পার নি ঘাঁটি দখলের পর অনেক জান্তা সেনার লাশ খুঁজে পেয়েছে। প্রতিরোধ বাহিনী বেশ কিছু অস্ত্র ও কিছু গোলাবারুদও দখল করেছে।
ওই মুখপাত্র বলেন, ঘাঁটিটি শাসকগোষ্ঠীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কালে ও গাঙ্গাও টাউনশিপের সীমান্তের কাছে বেশ কয়েকটি সামরিকপন্থী গ্রামের প্রধান প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান এটি।
বৃহস্পতিবার বুলেট হ্লা সোয়ে তার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে কান পার নি ঘাঁটির পতনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছিলেন, হামলার সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একজন মেজরসহ প্রায় ৭০ যোদ্ধা ঘাঁটিতে অবস্থান করছিল।
এদিকে, জান্তা যুদ্ধবিমানগুলো সংঘর্ষস্থলে এবং আশপাশের বেসামরিক গ্রামগুলোতে বিমান হামলা চালিয়েছে বলে ইরাবতীকে জানিয়েছেন প্রতিরোধ বাহিনীর মুখপাত্র। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সামরিক যুদ্ধবিমানগুলো ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় কালে টাউনশিপের গ্রামগুলোতে বোমা হামলা চালাচ্ছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিমান হামলায় শিশুসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। ১০টি গ্রামের পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
কালের এক বাসিন্দা শুক্রবার ইরাবতীকে বলেন, জান্তার যুদ্ধবিমানগুলো প্রতিনিয়ত চক্কর দিচ্ছে এবং আশপাশের গ্রামগুলোতে বোমা ফেলছে। অন্য সব বাসিন্দাদের সঙ্গে আমিও এখন বিমান হামলা থেকে পালাচ্ছি। প্রতিরোধ বাহিনীর দখল করা ঘাঁটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় যুদ্ধবিমানগুলো ব্যাপক বোমাবর্ষণ করছে।