• ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে সাময়িক সীমা মেনে নিতে আগ্রহী ইরান”

Mofossal Barta
প্রকাশিত মে ১৩, ২০২৫, ২০:৫৬ অপরাহ্ণ
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে সাময়িক সীমা মেনে নিতে আগ্রহী ইরান”

সংবাদ সংস্থা তাসনিম উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভানচির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, আমরা সমৃদ্ধকরণের স্তর ও পরিমাণে কিছু সীমাবদ্ধতা মেনে নিতে পারি। আমরা এখনো সমৃদ্ধকরণের স্তর ও পরিমাণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাইনি।’

সংবাদটি শেয়ার করুন....

এএফপি: ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে সাময়িক সীমাবদ্ধতা মেনে নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহী বলে জানিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা এখনো এমন সুনির্দিষ্ট বিষয়ে পৌঁছয়নি। দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন।

এর আগে তেহরান ও ওয়াশিংটন রবিবার তাদের চতুর্থ দফা পারমাণবিক আলোচনা করে, যা গত মাসে শুরু হয়েছিল।

একই সঙ্গে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে এটি ছিল তাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ। 

সংবাদ সংস্থা তাসনিম উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভানচির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, আমরা সমৃদ্ধকরণের স্তর ও পরিমাণে কিছু সীমাবদ্ধতা মেনে নিতে পারি। আমরা এখনো সমৃদ্ধকরণের স্তর ও পরিমাণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাইনি।’

ইরান বর্তমানে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত ৩.৬৭ শতাংশ সীমার অনেক ওপরে, তবে অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মান ৯০ শতাংশের নিচে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সোমবার বলেছেন, ইরানই বিশ্বের একমাত্র দেশ, যার পারমাণবিক অস্ত্র নেই, তবু তারা এই মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। 

সর্বশেষ আলোচনায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার ‘অবিচ্ছেদ্য’। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আলোচক স্টিভ উইটকফ এটিকে একটি ‘লাল রেখা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার এক বছর পর থেকে ইসলামি প্রজাতন্ত্রটি তাদের চুক্তি অনুযায়ী দায়বদ্ধতা কমাতে শুরু করে।

গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প তেহরানের বিরুদ্ধে তার ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতিকে পুনর্জীবিত করেছেন। যদিও তিনি পারমাণবিক কূটনীতিকে সমর্থন করেছেন, তবে কূটনীতি ব্যর্থ হলে সামরিক পদক্ষেপের হুমকিও দিয়েছেন। 

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করার অভিযোগ করে আসছে, তবে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে বলে দাবি করে। ইরান রবিবারের আলোচনাকে ‘কঠিন কিন্তু কার্যকর’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। অন্যদিকে একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ওয়াশিংটন ‘উৎসাহিত’ এবং উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে আলোচনার পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

 

এই আলোচনা সর্বোচ্চ নেতার পূর্ণ সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ‘আলোচনায় আমরা আমাদের নীতিমালা থেকে কোনোভাবেই সরে আসব না, তবে একই সঙ্গে আমরা উত্তেজনা চাই না।’

এ ছাড়া ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামি মঙ্গলবার দেশটির পারমাণবিক শিল্পকে তাদের ‘সম্পদ ও শক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বলে সংবাদ সংস্থা ইসনা জানিয়েছে।

আলোচনা চলতে থাকলেও ওয়াশিংটন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও তেল শিল্পকে লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছে, যার সর্বশেষটি সোমবার ঘোষণা করা হয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা আলী লারিজানি বলেছেন, ‘আমাদের ওপর যে প্রচুর চাপ রয়েছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’ তবে ইরানের সব সমস্যা নিষেধাজ্ঞার কারণে নয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।