• ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানিকগঞ্জে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন

Mofossal Barta
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ১৭:২১ অপরাহ্ণ
মানিকগঞ্জে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন
সংবাদটি শেয়ার করুন....

আল মামুন ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধ :

অপরিকল্পিতভাবে (খননযন্ত্র) ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে নদী তীরবর্তী এলাকায় হুমকিতে রয়েছে শিল্প কারখানা, কৃষিজমি, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে শেখ হাসিনার দোসরদের সঙ্গে আঁতাত করে বালু ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

অভিযোগ আছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার বেউথা বালুমহালের ইজারাদার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক খান তুষার, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই শামীম হোসেন ও মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদের মামাতো ভাই মাকছুদ। গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের প্রভাব বিস্তার করে তারা বালুমহালের ইজারা নিয়েছিলেন। অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি হাতিয়ে নিয়েছেন তারা।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর অল্প কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। তবে অদৃশ্য ক্ষমতার মাধ্যমে বালু ব্যবসা ফের চালু হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার জয়নগর এলাকায় কালীগঙ্গা নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব বালু বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্রি হচ্ছে। এলাকার তরা ব্রীজের পশ্চিমে নদীতে ড্রেজার দিয়ে সকাল-সন্ধ্যা বালু তোলা হচ্ছে। এসব বালু বাল্কহেডের মাধ্যমে নদীপথে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে।

তরা গ্রামের মারিয়া বেগম বলেন, অবৈধ ড্রেজারের কারণে আমাদের ফসলি জমি ভেঙে গেছে। মাটি কাটার ফলে স্কুল, শিল্প কারখানা, শ্মশান এমনকি বসতভিটা হুমকিতে পড়েছে। আমরা এ সবের প্রতিকার চাই।

মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ রফি অপু বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির কঠোর বিরোধ থাকলেও বালু ব্যবসায় দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সৌহার্দ্য রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের বন্ধ থাকা বালু ব্যবসার হাল ধরেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে জেলা বিএনপির। কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে অনুরোধ তদন্ত করে এ সব নামধারী নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সেই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

আওয়ামী লীগের নেতা এবং তরা বালুমহালের ইজারাদার শামীম হোসেনের ম্যানেজার বজলু বলেন, আমরা ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলন করছি। বালুমহালের নিয়ম অনুযায়ী বর্ষামাসে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা যাবে। সেই নিয়ম অনুযায়ী আমরা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়ে এসব বালুমহালের ইজারা নিয়েছে। তাদের এই ব্যবসার সঙ্গে আমাদের ছাত্রদল-যুবদলের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নেই। তবে অবৈধ কোনো ব্যবসায় আমাদের নেতাকর্মীরা জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়ে তারা বালুমহালের ইজারা নিয়েছেন। যদি ইজারা আইন ভেঙে বালু তোলা হয়, তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।