এতে নিরুপায় হয়ে লক্ষ্মীপুর জজ কোর্টে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী আবদুল হাই। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার ৪নং ইছাপুর ইউনিয়নের উত্তর নারায়নপুর হাজী বাড়ীর দরজায়।
জেলা প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে দোকানের ভাড়াটিয়াকে হাত করে জোরপূর্বক পৈতৃক সম্পত্তিতে দীর্ঘ ৩৪ বছর দখলে থাকা আবদুল হাইয়ের নির্মান করা পাকা দোকানঘর দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার ইউছুপ আলী, আবদুল কাদের, ফরিদ আহম্মেদসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
এতে নিরুপায় হয়ে লক্ষ্মীপুর জজ কোর্টে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী আবদুল হাই। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার ৪নং ইছাপুর ইউনিয়নের উত্তর নারায়নপুর হাজী বাড়ীর দরজায়।
সরেজমিনে শনিবার (২৪ মে) দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, উত্তর নারায়নপুর উজির আলী হাজী বাড়ীর মৃত আবদুল বারেকের ছেলে আবদুল হাই ১৯৯০ সাল থেকে পৈতৃক সম্পত্তিতে কাঁচা দোকানঘর এবং পরবর্তিতে ২০১২সালে পাকা দোকানঘর নির্মান করে নিজে এবং তার ছেলে মিলে ব্যবসা করে আসছেন। পরে ২০২২ সালে প্রথমে স্থানীয় খোরশেদ আলমকে পরবর্তীতে ২০২৩ সালে আরিফ নামে স্থানীয় এক যুবকে দোকানঘরটি ভাড়া দিয়েছেন। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত আরিফ আবদুল হাইকে সঠিকভাবে দোকানের ভাড়া প্রদান করে আসলেও পরবর্তী মাসের ভাড়া চাইতে গেলে বাঁধে বিপত্তি।
ভুক্তভোগী আবদুল হাই জানান, সব ঠিকঠাকই ছিলো। দীর্ঘ দুই যুগ থেকে অত্র স্থানটি আমার দখলে। খতিয়ান, বিদ্যুৎ বিল সবই আমার নামে। জমির খাজনাও আমি দিয়ে আসছি। প্রথমে আমি, তারপর আমার ছেলে ব্যবসা করে গিয়েছি। পরবর্তীতে আমার ছেলে বিদেশ চলে গেলে দোকানঘরটি প্রথমে খোরশেদ, পরে আরিফের নিকট ভাড়া দিয়ে দোকানের ভাড়া ভোগ করে আসছি। কিন্তু জুলাই মাসের ০১তারিখে আরিফের নিকট ভাড়া চাইতে গেলে আরিফ আমাকে সাফ জানিয়ে দেয়, সে আমাকে আর দোকানের ভাড়া প্রদান করবেনা। এ দোকানের মালিক নাকি আবদুল কাদের। তাদের সাথে তার চুক্তি হয়েছে। আমি নিরুপায় এবং নিরীহ একজন মানুষ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের দারস্থ হয়েও কোন সমাধান না পেয়ে কোর্টে মামলা করেছি। আমি এমন ঝুলুমের বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং পাশ^বর্তী জমির মালিক খোকন মিঞা জানান, আমরা প্রথম থেকেই দেখে আসছি আবদুল হাই এ স্থানটিতে প্রথমে চাষ পরে দোকানঘর নির্মান করে ব্যবসা করে গেছেন। পরবর্তীতে দোকান ভাড়া দিয়ে ভাড়া ভোগ করে আসছেন। কিন্তু গত কয়েক মাস আগে হঠাৎ করে দোকানঘরটি আবদুল কাদের ও তার পরিবার দখলে নেয় বলে জানতে পারি। একই কথা জানান, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পাশ^বর্তী জমির মালিক আবুল খায়ের।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল ও রাজা মিঞা জানান, সেই ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি আবদুল হাই কাকা অত্র স্থানে ব্যবসা করে আসছেন। পরবর্তীতে দোকানঘর ভাড়াও দিয়েছেন। কোন ঝামেলা হতে শুনিনি। কিন্তু গত কয়েক মাস আগে জানতে পারি আবদুল কাদের ও তার পরিবার মিলে দোকনঘরটি নাকি জোরপূর্বক দখলে নিয়েছেন।
আবদুল কাদেরসহ অভিযুক্তদের সাথে কথা বলতে গেলে তাদের কাউকে বাড়িতে না পাওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে আবদুল কাদের ছেলে ও মামলার আসামী আবুল কাশেম জানান, এ জমি তাদের। আবদুল হাইয়ের সাথে সমাধান হয়েছে। স্থানীয় সবুজ ও কামাল মেম্বারসহ অন্যরা এ বিষয়ে অবগত আছেন। এর বেশি তিনি আর কিছু বলতে রাজী হননি এবং কোন কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি।
দোকানের ভাড়াটিয়া আরিফ জানান, দোকানঘরটি প্রথমে আমি আবদুল হাইয়ের নিকট থেকে ভাড়া নিয়েছি এবং ওনাকেই ভাড়া প্রদান করেছি। পরবর্তীতে শালিসদারদের মাধ্যমে সিন্ধান্ত হয় আবদুল কাদেরকে ভাড়া প্রদান করতে। এ বিষয়ে কাগজও হয়েছে।
স্থানীয় সবুজ মেম্বারের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পাশর্^বর্তী ওয়ার্ডের কামাল মেম্বারের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ব্যস্ত থাকায় পরবর্তীতে কথা বলবেন বলে জানান।
ইউনিয় ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ ইব্রাহীম জানান, আদালতের নির্দেমক্রমে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে এবং দোকানের ভাড়াটিয়ার সাথে কথা বলে জানতে পারি সে মামলার বিবাদী পক্ষ হতে দোকনটি ভাড়া নেন। এ বিষয়ে ৩০০টাকার ষ্টামে একটি ভাড়ার চুক্তিপত্র দেখান। এর আগে দোকানটি বাদীপক্ষ থেকে ভাড়া নিয়েছেন, এমন কোন কথা আমাকে জানাননি।